আমার অনেক আগে থেকেই সফটওয়্যার তৈরি করার আগ্রহ ছিল। ভাবতাম আমি যদি একটা ওরকম সফটওয়্যার তৈরি করতে পারতাম! আর সেই সফটওয়্যার হতে হবে আমার মনের মতন (গ্রাফিক্যাল ইউসার ইন্টারফেস সমৃদ্ধ), সেই ভাসনা থেকেই সফটওয়্যার তৈরি করার জন্য নেমে পড়লাম। শুরু করলাম ঘাটাঘাটি, গুগলিং...... অনেক কিছু জানতে পারলাম। এক্ষেত্রে আমি টেকটিউনসের কাছেও ঋণি। অনেক ভেবে চিন্তে প্রথমেই শুরু করলাম জাভা প্রোগ্রামিং। কিন্তু এই প্রোগ্রামিংয়ে তেমন মজা পেলাম না। শুধুই কনসোল এপ (Console application)। যেটা আমার মোটেও ভাল লাগে না। যা ডস স্টাইলে কমান্ড প্রম্টের মাধ্যমে চালাতে হয়। ওকে যাইহোক বাদ যাক ভাল লাগা মন্দ লাগার কথা। এখন কাজের কথায় আসি।
Programming/Programm-এর ধারনা: সাধারণভাবে আমরা সফটওয়্যার/programm বলতে বুঝি কতগুলো নিরদেশের সমস্টি যা কম্পিউটার বুঝতে পারে এবং সে অনুযায়ী ফলাফল প্রদান করে। Programming-এর ভাষা মূলত তিন প্রকার। যথা-
১. যান্ত্রিক ভাষা: যান্ত্রিক ভাষা মানে যন্ত্র যেই ভাষা বোঝে সেই ভাষাই হল যান্ত্রিক ভাষা। অর্থাৎ বিদ্যুতের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতি। এই দুই অবস্থার উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের যান্ত্রিক ভাষা তৈরি হয়। এক্ষেত্রে এক (১) ও শূন্য (০) -কে এই দুই অবস্থার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। মূলত কম্পিউটার আমাদের দেয়া নিরদেশকে তার নিজস্ব ভাষা অর্থাৎ যান্ত্রিক ভাষায় (০ ও ১) বা বাইনারী পদ্ধতিতে রুপান্তরিত করে ফলাফল প্রদান করে।
২. এ্যাসেম্বলি ভাষা: এই ভাষা যান্ত্রিক ভাষা থেকে আরেকটু উন্নত। যেহেতু যান্ত্রিক ভাষায় অনেক বড় বড় সফটওয়্যার মানুষের পক্ষে তৈরি করা প্রায় অসম্ভব। এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্যই তৈরি করা হয় এ্যাসেম্বলার নামক অনুবাদক সফটওয়্যারটি। এটি দিয়ে খুব সহযেই মানুষের ভাষায় প্রোগ্রাম রচনা করা যায়।
৩. উচ্চ স্তরের ভাষা: বর্তমানে যেই ভাষাগুলাতে প্রোগ্রামিং করা হয় সেগুলোকে উচ্চ স্থরের ভাষা বলা হয়। অর্থাৎ Basic, C, Java, C++, Python ইত্যাদি ভাষাগুলোকে উচ্চ স্তরের (High level language) ভাষা বলে। এ ভাষা সম্পকর্কএ আমরা সবাই কম বেশি জানি। এটি যান্ত্রিক ও এসেম্বলি ভাষা থেকে অনেক অনেক উন্নত। এ ভাষাকে তৃতীয় প্রজন্মের ভাষা বলা হয়।
আপনি কেন প্রথমে ভিজুয়্যাল বেসিক দিয়ে প্রোগ্রামিং শুরু করবেন
উচ্চ স্তরের ভাষাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সহজ ও বোধগম্য ভাষা হল ভিজুয়্যাল বেসিক। এটি হল High Lavel Language-এর সবচেয়ে প্রাথমিক প্রোগ্রামিং। এটার বিশেষত্য হল এটাতে ভিজুয়্যাল ভাবে প্রোগ্রাম রচনা করা যায়। অর্থাৎ আপনি যেই প্রোগ্রামটি নেয় কাজ করবেন সেটির বাহ্যিক গঠন আপনি দেখতে পারবেন। আর এর প্রোগ্রাম কোডগুলো প্রায় সব ইংরেজী শব্দের ন্যায়। ফলে আপনি খুব সহজেই প্রোগ্রাম কোড বুঝতে পারবেন এবং মুখস্ত করতে পারবেন। এতে আপনি অন্যান্য ভাষাগুলোর মতন Logic ব্যবহার করতে পারবেন। যদি আপনি প্রথমেই আমার মত Java/C++/C/Python ইত্যাদি প্রোগ্রামিং শুরু করেন, তবে আমার মনে হয় আপনি প্রোগ্রামিংয়ের আসল মজা থেকে পাবেন না। এসব প্রোগ্রাম কমান্ড ভিত্তিক কাজ করে (ডস সিস্টেম), প্রোগ্রামটা রান করলে কাল একটা পর্দায় কমান্ড ভিত্তিক কাজ করতে হয় (Visual Basic এও কনসোল এপ তৈরি করা যায়।) যা আমার মোটেও ভাল লাগে না। যদিও জানি Java/C++/C/Python ইত্যাদি প্রোগ্রামিংয়ে GUI (Graphical User Interface) সমৃদ্ধ সফটওয়্যার তৈরি করা য়ায়। তবে জানিনা তা কবে সম্ভব, হয়ত খুব গভীরে এটা আছে! যা খুব সময় সাপেক্ষ এবং জটিল। এক কথায় খুব কঠিন। যারা প্রোগ্রামিংয়ে নতুন আসে তারা সাধারনত প্রথমে এসে এসব (Java/C++/C/Python) ল্যাংগুয়েজ দিয়ে Console App তৈরি করে।
ফলে তারা এটাতে তেমন মজা পায়না। কারণ তাদের সফটওয়ারের ধরনের সাথে সাধারণ সফটওয়ারের গঠনগত মিল নেই। তাদের বেশির ভাগই প্রোগ্রামিং করতে এসে জড়ে যায়। তাই আপনার উচিত প্রথমে Visual Basic দিয়ে প্রোগ্রামিং শুরু করা।
Visual Basic প্রোগ্রামের বৈশিষ্ঠ্য
- এতে মনের মত লজিক ব্যবহার করে প্রোগ্রাম তৈরি করা যায়।
- কোড লেখার পাশাপাশি এপ্লিকেশন ফর্ম দেখা যায়।
- ইউন্ডোজ Application তৈরি করার জন্য সবচেয়ে বেশি ভিজুয়্যাল টুলস রয়েছে এবং একে ইউন্ডোজ Application তৈরি করার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সহজ মাধ্যম বলা যেতে পারে। যা প্রয়োজন অনুযায়ী বসিয়ে কোড লেখা যায়।
- প্রোগ্রাম রচনার ধাপগুলো- ১. প্রবাহচিত্র, ২. কোড লিখা এবং ত্রুটি দূর করা [প্রোগ্রাম তৈরির সময় আপনাদেরকে বুঝানো হবে]।
- এটি একটি উচ্চ স্তরের প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ।
- বলা হয়ে থাকে যে, ভিজুয়্যাল বেসিক সি++ এর জন্য একটি GUI এডিটর।
- এটি মাইক্রোসফটের একটি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ। যে প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজের ভাষা প্রায় ইংরেজী শব্দের ন্যায়।
- এটি একটি উচ্চ স্তরের প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ।
- এই প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ দিয়ে তৈরি সফটওয়্যার চালাতে মাইক্রুসফটের তৈরি .net Framework ইনস্টল করতে হয়।
- শুধু মাইক্রোসফট ইউন্ডোজ Supported এপলিকেশন তৈরি করা যাবে (যেমন- .exe, .dll, .msi ইত্যাদি)।
আপনি জানেন কি?
বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় টাইপিং সফটওয়্যার ”বিজয়”, বাংলা ইউনিকোড কনভার্টার ”নিকশ কনভার্টার” ইত্যাদি সহ আরো অনেক জনপ্রিয় সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে ভিজুয়্যাল বেসিক দিয়ে এবং আরো অনেক ছোট খাট সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে ভিজুয়্যাল বেসিক দিয়ে।
এখন আমি আপনাকে বলছি! সিদ্ধান্ত আপনার আপনি কোন ল্যাংগুয়েজটি দিয়ে আপনার প্রোগ্রামিং শুরু করবেন। আর আমি তাদেরও বলছি যারা সদ্য Java/C++/C/Python ইত্যাদি প্রোগ্রমিং শুরু করেছেন এবং মজা পাচ্ছেন না আপনারা Visual Basic দিয়ে প্রোগ্রামিং করে দেখতে পারেন। তবে এখানে উল্লেখ্য যদি আপনি শুধু মাইক্রোসফট ইউন্ডোজ Supported এপলিকেশন তৈরি করতে চান তবেই আপনার জন্য এ পরামর্শ প্রযোজ্য।
উপরের মতামতগুলো একান্তই আমার ব্যক্তিগত। জানিনা অন্যের মতামতের সাথে মিলবে কিনা। যদি আপনাদের চোখে আমার লেখায় কোন ভুল ধরা পড়ে তবে দয়া করে বলে দিবেন। আমি শুধরিয়ে নেব। কারণ- মানুষ মাত্রই ভুল করে।
আমি Visual Basic প্রোগ্রামিং নিয়ে ধারাবাহিক পোস্ট করতে চাই। এক্ষেত্রে আপনাদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণাই আমার একমাত্র অবলম্বন হতে পারে।
ধারাবাহিক সিরিজে আপনাদের জন্য থাকছে (প্রথমিকভাবে বাছাই করা বিষয়) :
a) Informative and Basic Lesson
1. Installing The Visual Basic IDE.
2. Variables and Math Operators.
3. Introduction To Windows Forms and Form Properties.
4. Input Box & Functions.
5. Etc........
b) Special Project Lesson:
1. Create a basic calculator.
2. Create a alarming software.
3. Create a web browser.
4. Create database software.
6. How edit any .exe file.
0 comments:
Post a Comment